Home » , » জাতীয় শিক্ষানীতি

জাতীয় শিক্ষানীতি

Written By Unknown on Wednesday, December 8, 2010 | 11:26 PM

কুদরাত-এ-খুদা শিক্ষা কমিশনের আলোকে যুগের উপযোগী করে প্রণীত শিক্ষানীতি দীর্ঘ আলোচনা-পর্যালোচনার পর জাতীয় সংসদে গৃহীত হয়েছে। এর মাধ্যমে আধুনিক একটি শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার পথ প্রশস্ত হলো। জাতীয় শিক্ষানীতি ২০০৯ নিয়ে সরকারের সদিচ্ছার কথা অনেক আগে থেকেই আলোচিত হয়ে আসছিল। ২০১৪ সালের মধ্যে দেশকে নিরক্ষরমুক্ত করার উচ্চাশা নিয়ে সরকারের পদযাত্রা সূচিত হলেও প্রায় দুই বছর লেগে যায় এই শিক্ষানীতি প্রণয়ন করে তা জাতীয় সংসদে পাস করাতে। ফলে দেশের শিক্ষা ক্ষেত্রে যে আকাশচুম্বী বিভাজন ছিল, তা কিছুটা হলেও দূর হবে বলে আশা করা যায়।

বিশেষ করে এত দিন মাদ্রাসা শিক্ষা নিয়ে যে নেতিবাচক প্রচারণা চলে আসছিল, পরিবর্তিত শিক্ষানীতির মাধ্যমে সে বিতর্কের অবসান হবে বলে আশা করা যায়। এত দিন পর্যন্ত মাদ্রাসা শিক্ষাকে মূলধারা থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখার যে প্রবণতা ছিল, তা দূর হবে। কারণ নতুন শিক্ষানীতিতে মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থাকে আধুনিকীকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
একই সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষাস্তরকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত বিস্তৃত করা, প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা ও জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা অনুষ্ঠানের মতো গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়_এই শিক্ষানীতিকে সামনে রেখেই চালু হয়েছে। ইতিমধ্যে তা প্রায় সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে। মাধ্যমিক শিক্ষাকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত সম্প্রসারণ করার যে পরিকল্পনা রয়েছে, তাকেও অনেকেই উচ্চাশা বলে আখ্যায়িত করেছেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, দেশে কয়েক বছরে শিক্ষা খাতে যে উন্নয়ন সাধিত হয়েছে, তাতে এই আশঙ্কা হয়তো কেটে যেতে পারে।
নতুন শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের জন্য সরকার আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছে। এর মধ্যে প্রধান দিক হচ্ছে যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ। কারণ নতুন নীতি কার্যকর করতে হলে প্রয়োজনীয় শিক্ষক নিয়োগ অপরিহার্যর্। মাধ্যমিক শিক্ষা যেহেতু দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত বিস্তৃত হবে, তাই সেখানে শিক্ষক নিয়োগের বিষয়েও পরিবর্তন আনার প্রয়োজন হবে। নতুন শিক্ষানীতি কার্যকর করতে গেলে অবকাঠামোগত কিছু পরিবর্তন করতে হবে। সেদিকেও যে সরকার নজর দিয়েছে, তা বোঝা যায়।
সরকার শিক্ষাব্যবস্থাকে যুগোপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ইতিমধ্যে শিক্ষামন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, শিক্ষাবর্ষ শুরু হওয়ার আগেই বিনা মূল্যে বই চলে যাবে শিক্ষার্থীদের হাতে। আর এ কাজ শুরু হবে ১৫ ডিসেম্বর থেকে। সেশনজট সৃষ্টি হতে পারে_এমন কোনো সুযোগ যাতে তৈরি না হয়, সেদিকেও সরকার যথেষ্ট সজাগ রয়েছে, যা প্রমাণিত হয় ২০১১ সালে অনুষ্ঠেয় এসএসসি পরীক্ষার রুটিনকে অনড় রাখার মাধ্যমে। বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলার সঙ্গে মিল রেখে পরীক্ষার রুটিন প্রণয়ন করা হয়েছে। যাতে খেলার কারণে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশ নেওয়া বিঘি্নত না হয়। শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়ার ব্যাপারেও সরকারের নতুন চিন্তার কথা জানানো হয়েছে জাতীয় সংসদে। বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া বন্ধ করার ব্যাপারে অধিক হারে টিফিনের ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে সরকার। দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত বিনা মূল্যে বই দেওয়ার ইচ্ছা আছে সরকারের।
তবে পাঠ্য বই মুদ্রণ ও শিক্ষার্থীদের হাতে ঘোষিত সময়ের মধ্যে পেঁৗছানোর ক্ষেত্রে নানা ঘাপলার কথা জানা যাচ্ছে_এ ব্যাপারে সরকারেরর ত্বরিত দৃষ্টি দেওয়া দরকার।
আন্তরিকতা এবং সততার মাধ্যমে গৃহীত শিক্ষানীতি শিক্ষাব্যবস্থায় সুপরিবর্তন আনবে এবং দেশের উন্নয়নে তা সুনির্দিষ্ট প্রভাব ফেলবে_এমন প্রত্যাশা সবার।

0 comments:

Post a Comment

 
Support : Dhumketo ধূমকেতু | NewsCtg.Com | KUTUBDIA @ কুতুবদিয়া | eBlog
Copyright © 2013. News 2 Blog 24 - All Rights Reserved
Template Created by Nejam Kutubi Published by Darianagar Publications
Proudly powered by Dhumketo ধূমকেতু