Home » , , , » সফলদের স্বপ্নগাথা- যেতে হবে বহুদূর by জোয়ান বায়েজ

সফলদের স্বপ্নগাথা- যেতে হবে বহুদূর by জোয়ান বায়েজ

Written By Unknown on Friday, December 20, 2013 | 7:00 PM

সবাই এক হলেই অন্য রকম কিছু করা সম্ভব। এখন বিভিন্ন দেশে দুর্নীতি আর কুশাসনের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের আন্দোলন চলছে। সবাই মিলে এক হয়েছে বলেই এমনটি করা সম্ভব হচ্ছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ সারা বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় এই ধরনের আন্দোলন বিস্তৃত হচ্ছে। এ ধরনের আন্দোলনের গতিপ্রকৃতি অনেক প্রভাবশালী ও জটিল প্রকৃতির। কোনো ধরনের জাতীয় নেতা ছাড়া এ ধরনের কাজ নিঃসন্দেহে অসাধ্য সাধনই বটে।

বিভিন্ন সামাজিক আন্দোলনে শিল্পীরা সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই অংশ নেন। এ ক্ষেত্রে শিল্পীদের দায়বদ্ধতাও বেশি। শিল্পকলা ও আন্দোলনের মাঝে যোগসূত্র অবশ্যই আছে। আমার অভিজ্ঞতা থেকে আমি বলতে পারি, সাধারণ মানুষের সঙ্গে শিল্পীদের সংযোগই এই বৈচিত্র্যপূর্ণ যোগসূত্রের কারণ। জেলের কয়েদি থেকে শুরু করে যুদ্ধক্ষেত্রের যোদ্ধার সঙ্গে আমি শিল্পী হিসেবে কথা বলতে পারি। সে আমার কথা শুনতে পারে। যা অন্যান্য সাধারণ মানুষের পক্ষে বলা সম্ভব নয়। এমন কাজ করতে পেরে আমি সত্যিই সৌভাগ্যবান। প্রকৃতি আমাকে সত্যিকারের সৌভাগ্য উপহার দিয়েছে। আমার কণ্ঠের গানই আমার সব। আমার এই প্রকৃতিপ্রদত্ত কণ্ঠ দিয়ে আমি যা ইচ্ছে বলতে পারি। আমি আমার কণ্ঠের গানকে এমনভাবে ব্যবহার করেছি, যা দিয়ে আমি জীবনের প্রকৃত স্বাদ উপভোগ করেছি। আমার জীবনকে পরিপূর্ণ করেছে আমার কণ্ঠ, আমার গান।

এই তো কিছুদিন আগে এ বছর বর্ণবাদবিরোধী ও নাগরিক অধিকার আন্দোলনের নন্দিত মার্কিন নেতা মার্টিন লুথার কিংয়ের ওয়াশিংটন পদযাত্রা ও ঐতিহাসিক ভাষণ ‘আই হ্যাভ অ্যা ড্রিম’-এর অর্ধশত বর্ষপূর্তি উদ্যাপন করা হলো। এই দীর্ঘ সময়ে বিশ্বব্যাপী নাগরিক আন্দোলনের লক্ষ্য কিছুটা হলেও অর্জিত হয়েছে। কিন্তু পুরোপুরি সেই আন্দোলনের লক্ষ্য নাগরিকদের অধিকার এখনো সম্পূর্ণ প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এখনো আমাদের অধিকার আদায়ের জন্য অনেক দূর যেতে হবে। খুব সাধারণ অর্থে, এই পৃথিবীর মতো নিষ্ঠুর জায়গা আর একটিও নেই। এখানে অধিকাংশ মানুষই কেউ কারও কথা মনে রাখে না, কেউ অন্যের জন্য কিছু চিন্তা করে না। দিনকে দিন বিশ্বব্যাপী মানুষে মানুষে বিভেদ বেড়েই চলছে। এই বৈষম্য নিঃসন্দেহে বড় ধরনের সামাজিক বিপর্যয়।

আমাদের নাগরিক অধিকার আদায়ের আন্দোলনকে বাস্তবায়ন করতে হবে। আমাদের সংগ্রামকে অনেক দূর নিয়ে যেতে হবে। থেমে পড়লে হবে না। তবে এটা নিঃসন্দেহে অনেক কঠিন একটি কাজ। কারণ, অধিকার আদায়ের জন্য অনেক দিন ধরে বেশি কিছু করা কিংবা দীর্ঘমেয়াদি আন্দোলন চালানো অনেক বড় কাজ। তবে যেকোনো আন্দোলন সফলতার ক্ষেত্রে আমার নিজের মূলমন্ত্র হলো—ক্ষুদ্র জয় আর বড় পরাজয় মেনে চলা। আপনি যদি বড় সব পরাজয়কে মেনে নিতে পারেন, তাহলে ক্ষুদ্র জয়েই খুঁজে পাবেন পরিপূর্ণ তৃপ্তি।

 সেই ষাটের দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতোই বিভক্ত ছিল। এখানকার নাগরিকদের ভিয়েতনাম যুদ্ধ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে অনেক তর্ক ছিল। আমরা যারা যুদ্ধের বিপক্ষে ছিলাম, তারা আমাদের আসল কাজ সম্পর্কে জানতাম। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে কীভাবে যুদ্ধ বন্ধ করা যায় তার জন্য নতুন কোনো উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টা করতাম। কারণ আমি অনেক ছোটবেলা থেকে নিজেকে অহিংস আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত করি। যখন আমার বয়স ১৫, তখন আমি পথে নামি। এ জন্যই বোধ হয় আমি অন্যদের মতো ছিলাম না। সেই সব সাধারণ মানুষ, যারা যুদ্ধের বিপক্ষে ছিল, তাদের অধিকাংশেরই যুদ্ধ নিয়ে রাজনৈতিক বা সামাজিক কোনো ধারণা ছিল না। তারা যুদ্ধ চাইত না, কিন্তু যুদ্ধ বন্ধে কী করতে হবে, সেটা তারা জানত না। তাই তো শেষ পর্যন্ত তারা নিজ নিজ কাজে ফিরে যায়। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে এটা ঘটেনি। আমি ছোটবেলা থেকে নানা ধরনের আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। তাই তো যুদ্ধ শেষেও আমার যুদ্ধ শেষ হয়নি।

সূত্র: রেডিও ফ্রি ইউরোপ রেডিও লিবার্টিকে দেওয়া জোয়ান বায়েজের ২০১৩ সালের এক সাক্ষাৎকার অবলম্বনে লিখেছেন জাহিদ হোসাইন খান

0 comments:

Post a Comment

 
Support : Dhumketo ধূমকেতু | NewsCtg.Com | KUTUBDIA @ কুতুবদিয়া | eBlog
Copyright © 2013. News 2 Blog 24 - All Rights Reserved
Template Created by Nejam Kutubi Published by Darianagar Publications
Proudly powered by Dhumketo ধূমকেতু