Home » , » দাম বেড়েছে চাল আটা তেল পেঁয়াজের by রাজীব আহমেদ

দাম বেড়েছে চাল আটা তেল পেঁয়াজের by রাজীব আহমেদ

Written By Unknown on Sunday, January 2, 2011 | 3:08 PM

রাজধানীর বাজারে চাল, আটা, ভোজ্য তেল, চিনি, পেঁয়াজÑএই পাঁচটি পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। পরিবারের বাজার খরচের বড় অংশটি ব্যয় হয় এই পণ্যগুলোর পেছনে। এসব পণ্যের দাম কেজি/লিটারপ্রতি তিন থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে নিু ও মধ্য-আয়ের পরিবারগুলো।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তালিকায় চাল, আটা, ভোজ্য তেল, চিনি ও পেঁয়াজকে অতি নিত্যপ্রয়োজনীয় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বাজারে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত এক মাসে সব ধরনের চালের দাম কেজিপ্রতি তিন থেকে পাঁচ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আটার দাম বেড়েছে তিন থেকে চার টাকা, ভোজ্য তেলের দাম লিটারপ্রতি চার টাকা, চিনি কেজিপ্রতি তিন থেকে পাঁচ টাকা এবং পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ১৫ টাকা বেড়েছে।
বাজারে মোটা চালের দাম রাখা হচ্ছে কেজিপ্রতি ৩৫-৩৬ টাকা। মাঝারি মানের চাল বিক্রি হচ্ছে ৩৭-৪১ টাকা দরে। এ ছাড়া ভালো মানের সরু চালের দাম চাওয়া হচ্ছে ৪৪-৫২ টাকা। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারের লাকসাম ট্রেডার্সে প্রতি কেজি ভালো মানের নাজিরশাইল চালের দাম চাওয়া হয়েছে ৫০-৫২ টাকা। মিনিকেট চালের দাম চাওয়া হয়েছে ৪৬ টাকা। ভালো মানের বাছাইকৃত পারিজাত ও বিআর-২৮ জাতের চালের দাম চাওয়া হয়েছে কেজিপ্রতি ৪০-৪২ টাকা। মোটা চাল সব দোকানে পাওয়া যাচ্ছে না।
মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের চাল ব্যবসায়ী কালিদাস গতকাল কালের কণ্ঠকে জানান, পাইকারি বাজারে মোটা চালের দাম কেজিপ্রতি ৩২ টাকার বেশি। সাধারণ মানের পাইজাম ও পারিজাত চাল পাইকারি সাড়ে ৩৬ থেকে ৩৮ টাকা। মিনিকেট পাইকারি সাড়ে ৪৪ ও নাজিরশাইল ৪১ থেকে ৪৭ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
চালের দাম বাড়ার কারণ সম্পর্কে কালিদাস বলেন, কৃষক ধান বিক্রি করছেন না বলে দাম অনেক বেড়ে গেছে। মোটা ধানও বিক্রি হচ্ছে মণপ্রতি ৮০০ টাকার বেশি। এ কারণেই চালের দাম বেশি।
টিসিবির হিসাবে এক মাস আগে প্রতি কেজি খোলা আটার দাম ছিল ২৯ টাকা। বর্তমানে তা ৩৩ টাকা, এক মাসে যা বেড়েছে প্রায় ১০ শতাংশ। কম্পানিগুলো তাদের আটার দাম কেজিপ্রতি দুই টাকা বাড়িয়েছে। রাজধানীর অলিগলির খুচরা দোকানে বিভিন্ন কম্পানির আটার প্রতি দুই কেজির প্যাকেট সর্বোচ্চ ৭৩ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। পূর্ব তেজতুরি বাজারের সাইদ অ্যান্ড ব্রাদার্স স্টোরে তীর ব্র্যান্ডের আটার দুই কেজির প্যাকেট গতকাল বিক্রি হয়েছে ৭২ টাকায়। বিক্রেতা জানান, এক সপ্তাহ আগে এটা ছিল ৬৬ টাকা। এ ছাড়া পুষ্টি, ফ্রেশ, ইফাদ ব্র্যান্ডের আটার দুই কেজির প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে ৬৯-৭২ টাকা দরে।
সম্প্রতি সরকার ভোজ্য তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সংগতি রেখে ১৫ দিন পরপর নির্ধারণ করার উদ্যোগ নেয়। ফলে চলতি মাসে সয়াবিন তেলের দাম বাড়ে চার টাকা। গত ৫ ডিসেম্বর ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে ঢাকায় খুচরা পর্যায়ে প্রতি লিটার সয়াবিনের সর্বোচ্চ দাম ৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এরপর ২২ ডিসেম্বর চার টাকা বাড়িয়ে ঢাকায় প্রতি লিটার খোলা সয়াবিনের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৯০ টাকা ও চট্টগ্রামে ৮৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়। ওই দিন পাইকারি পর্যায়ে ঢাকায় মিলগেটে সয়াবিন ৮৮ টাকা ও চট্টগ্রামে ৮৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এক ও দুই লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের ক্ষেত্রে খোলা ভোজ্য তেলের দামের চেয়ে সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ বাড়ানোর সুযোগ পাবেন ব্যবসায়ীরা। ফলে এক লিটারের বোতলজাত সয়াবিনের সর্বোচ্চ দাম পড়বে ১০১ টাকা ২০ পয়সা। আর পাঁচ লিটারের বোতলজাত তেলের ক্ষেত্রে বোতলের দাম সংযুক্ত হবে। রাজধানীর বাজারগুলোতে বর্তমানে রূপচাঁদা, তীর, ফ্রেশ, মুসকান, পুষ্টিসহ প্রায় সব কম্পানির পাঁচ লিটারের বোতল ৫০৫-৫১০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। গতকাল কারওয়ান বাজার, পলাশীতে বুয়েটের অস্থায়ী বাজার ও হাতিরপুল বাজার ঘুরে তেলের একই দাম দেখা গেছে। তবে কারওয়ান বাজারে বোতলপ্রতি আরো পাঁচ টাকা কম রাখছেন বিক্রেতারা।
গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রতিকেজি চিনি বিক্রি হয় ৫৬-৫৮ টাকা দরে। পলাশী বাজারে তা ৬০ টাকা দাম চেয়েছেন বিক্রেতারা। টিসিবির হিসাবে দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি দুই টাকা।
পেঁয়াজের দাম নিয়ে গেল মাসে তুঘলকি কারবার ঘটেছে। ভারত রপ্তানি বন্ধ করায় মাসের মাঝামাঝিতে দেশীয় পুরনো পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ৭০ টাকায় উঠে যায়। আর নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৫৫-৬০ টাকা দরে। পরে তা কমে ৪০ টাকায় নামে। আবার গত সপ্তাহে তা বেড়ে দেশীয় নতুন পেঁয়াজ এখন ৪৫-৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ফলে এক মাস শেষে পেঁয়াজের দাম আগের মাসের চেয়ে ১৫ টাকা বেশি। আগের মাসে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৩৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
এক মাসে পাঁচটি অতি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি সম্পর্কে জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারে বাজার করতে আসা তেজতুরি বাজারের গার্ডেন রোডের বাসিন্দা লিয়াকত হোসেন সিকদার বলেন, আদার দাম ১০ টাকা বাড়লেও তেমন প্রভাব পড়ে না। কিন্তু চালের দাম এক টাকা বাড়লে মানুষের অনেক ক্ষতি হয়। তিনি বলেন, এক মাসে পাঁচটি পণ্যের দাম বেড়েছে। এ পণ্যগুলোই পরিবারের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।

0 comments:

Post a Comment

 
Support : Dhumketo ধূমকেতু | NewsCtg.Com | KUTUBDIA @ কুতুবদিয়া | eBlog
Copyright © 2013. News 2 Blog 24 - All Rights Reserved
Template Created by Nejam Kutubi Published by Darianagar Publications
Proudly powered by Dhumketo ধূমকেতু