Home » , , » বছরজুড়ে বেরসিক বাজারদরে জনগণ ছিল দিশেহারা by রেজাউল করীম

বছরজুড়ে বেরসিক বাজারদরে জনগণ ছিল দিশেহারা by রেজাউল করীম

Written By Unknown on Thursday, January 20, 2011 | 12:31 PM

ভাতহীন সংসারের শেষ বাসন ভাঙ্গার মত বছর জুড়ে বেরসিক অপ্রেমে জনগণের হূদয় ভেঙেছে বাজার দর। সব পণ্যের দাম বেড়েছে দফায় দফায়। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে চালের দাম। আটা, মসুর ডাল, পেঁয়াজ, আলু, গুঁড়ো দুধ, ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে সমানে পালস্না দিয়ে।

আর দামের এই পাগলা মাতমে জনগণ ছিল দিশেহারা। বাজারে নিত্যপণ্যের দাম শুনেই দিশেহারা হয়ে ওঠেছেন। বছরের শেষদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে আমদানি পণ্যের দাম বাড়ার ফলে স্থানীয় বাজারে তার প্রভাব পড়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণের সরকারের নেয়া উদ্যোগ বারবার ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে।

উচ্চ মূল্যস্ফীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশের নিন্ম আয়ের লোকদের আয় বাড়ছে না। তাদের আয়-উপার্জন প্রচন্ড চাপের মধ্যে পড়ছে।

অন্যদিকে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি হচ্ছে না। একই সঙ্গে মূল্যস্ফীতি ও বেকারত্ব বেড়ে যাওয়ার প্রভাবে দারিদ্র্য বেড়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি নিন্মবিত্ত ও নিন্ম মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষকে সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় ফেলেছে। গত এক বছরে সরকারের সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় মূল্যস্ফীতিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হলেও সরকার কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে তা নামিয়ে আনতে পারেনি। কাগজে-কলমে মুল্যস্ফীতি কমে এলেও বাজারে তার চিত্র ছিল উল্টো। বাজারে প্রতিদিনই বেড়েছে বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান বু্যরোর (বিবিএস) সর্বশেষ হিসাবে, ১২ মাসের গড় ভিত্তিতে গেল অক্টোবরে মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ১২ শতাংশে।

গত বছরের অক্টোবরে গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ১১ শতাংশ। ২০১০ জানুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ, যা গতবছর (২০০৯) জানুয়ারিতে ছিল ৮ দশমিক ৪৬ শতাংশ, ২০১০ ফেব্রুয়ারিতে ৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ, ২০০৯ এই সময়ে তা ছিল ৮ দশমিক ১০ শতাংশ, ২০১০ মার্চ ৬ দশমিক ২৬ শতাংশ, যা ২০০৯ মার্চে ছিল ৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ, ২০১০ এপ্রিলে ৬ দশমিক ৫১ শতাংশ, যা ২০০৯ এপ্রিলে ছিল ৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ, ২০১০ মে ৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ, যা গত বছরের মে মাসে ছিল ৭ দশমিক ৩২ শতাংশ। বছরের পাঁচ মাস মুল্যস্ফীতি কমে আসার পর তা পরের মাসগুলোতে বাড়তে থাকে। জুন-জুলাইয়ে তা বেড়ে যথাক্রমে ৭ দশমিক ৩১ শতাংশ ও ৭ দশমিক ৬৩ শতাংশ গিয়ে দাঁড়ায়, ২০০৯ সালে ছিল যথাক্রমে ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ ও ৬ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। আগস্টে ৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ, যা গত বছররে আগস্টে ছিল ৫ দশমিক ৬০ শতাংশ, সেপ্টেম্বরে ৮ দশমিক শতাংশ যা ২০০৯ সেপ্টেম্বরে ছিল ৫ দশমিক ১৫ শতাংশ।

ডিসেম্বরে কনজু্যমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত এক বছরে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে ২০ শতাংশেরও বেশি হারে। সরকার ২০০৯-১০ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে সীমাবদ্ধ রাখার যে প্রত্যাশা করেছিল তা পূরণ হয়নি, বরং মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়ায় ৭ দশমিক ৩১ শতাংশ। ২০১০ সালের জানুয়ারি মাস থেকে খাদ্যদ্রব্য মূল্যস্ফীতি প্রায় ১০ শতাংশের ওপর থাকার কারণেই মূল্যস্ফীতিকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে আবদ্ধ রাখা সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে কয়েক মাস ধরে শহরের তুলনায় গ্রামে মূল্যস্ফীতি বেশি হারে বেড়েছে। মূল্যস্ফীতির এ প্রবণতা গ্রামের নিন্মআয়ের মানুষের জীবনযাত্রা আরও কঠিন করে তুলেছে।

0 comments:

Post a Comment

 
Support : Dhumketo ধূমকেতু | NewsCtg.Com | KUTUBDIA @ কুতুবদিয়া | eBlog
Copyright © 2013. News 2 Blog 24 - All Rights Reserved
Template Created by Nejam Kutubi Published by Darianagar Publications
Proudly powered by Dhumketo ধূমকেতু