Home » , » শিং মাছের বিপর্যয়ের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে

শিং মাছের বিপর্যয়ের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে

Written By Unknown on Monday, January 17, 2011 | 11:37 PM

ত ১২ ও ১৯ ডিসেম্বর তারিখে দৈনিক ইত্তেফাকের মাটি ও মানুষের কৃষি পাতায় "বিপর্যয়ের মুখে শিং মাছের চাষ" বিষয়ক দু'পর্বে দুটি লেখা লিখেছিলাম।

মাছের রোগ সমাধানকল্পে গত ২৬ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য বিভাগের শিক্ষক মোহাম্মদ মামুন চৌধুরী কৃষি পাতায় আমার লেখাটির গুরুত্ব ও দেশের মৎস্য খামারিদের কথা চিন্তা করে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন তার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানাই। তবে মামুন চৌধুরী শিং মাছের এ রোগটিকে "ইএসসি" বা এন্টেরিক সেপটিসেমিয়া অফ ক্যাটফিস রোগ বলে শনাক্ত করেছেন যা এডওর্য়াডসিয়েলা ইকটালুরি নামক পরজীবী প্রোটোজোয়ার এর সংক্রমণে হয়ে থাকে বলে উলেস্নখ করেছেন। তিনি আরো লিখেছেন, এ রোগের জীবাণু ১৮০ থেকে ২৮০ সেন্টিগ্রেট তাপমাত্রায় অতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তিনি এ রোগটিকে যেভাবে বর্ণনা করেছেন বাস্তবে তারচেয়ে বেশি বলে মনে হয়েছে আমার কাছে যেমন-

১. যে তাপমাত্রায় এ রোগটির জীবাণু অতিদ্রুত বংশ বিস্তারের কথা উলেস্নখ করেছেন আমাদের দেশের পানির বা আবহাওয়ার তাপমাত্রা এর ধারের কাছেও নেই তারপরেও এটি অতিদ্রুত বংশ বিস্তার করছে। তাহলে কি আমরা ধরে নেব এটা পরিবর্তনশীল জীবাণু?

২. প্রাথমিক পর্যায়ে একধরনের পরজীবীর দ্বারা আক্রান্ত হয়ে এ রোগের সৃষ্টির কথা উলেস্নখ করেছেন। যদি পরজীবী দ্বারা আক্রান্ত হয়ে এ রোগের সৃষ্টি হয়ে থাকে তাহলে ওই নির্দিষ্ট পরজীবীর ঔষধ প্রয়োগ করে অভিমুখেই পরজীবী নিধন করে এ রোগ থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব কিন্তু বাস্তবে কোনো ঔষধেই এ রোগ থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া যায় না।

৩. আর এ রোগের চিকিৎসার জন্য বিভিন্নজাতের এন্টিবায়োটিক এর কথা উলেস্নখ করেছেন এবং এর প্রয়োগবিধি খাবারের সাথে মিশিয়ে প্রয়োগের কথা বলেছেন। এ প্রসঙ্গে আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে বলতে চাই-কোনো মাছ যখন রোগাক্রান্ত হয় তখন স্বাভাবিক কারণে খাবারের প্রতি অনিহা দেখা দেয় আবার কখনো কখনো একবারেই খায় না। সে জন্য খাবারের সাথে এন্টিবায়োটিক প্রয়োগে কতটুকু কাজে লাগবে তা বলা কঠিন।

আমার এ কথাগুলো বলার অর্থ হল মামুন চৌধুরীর যে সব চিকিৎসার কথা উলেস্নখ করেছেন আমাদের দেশের শিং মাছ চাষিদের এ সব চিকিৎসা সব সময় করছেন কিন্তু কোনো ফল আসছে না।

আমি কয়েকটি পর্যবেক্ষণ এখানে উলেস্নখ করছি-

১. পর পর ২ বছর পুকুরে শিং মাছের চাষ করার পর তার পরের বছরে পুকুরের তলা ভাল করে শুকিয়ে যথারীতি চুন প্রয়োগ দিয়ে প্রায় ২ মাস পর শিং মাছের মজুদ করা হয় কিন্তু বাজারজাত করার ঠিক আগে প্রায় ৩ টন শিং মাছ মারা যায়।

২. সম্পূর্ণ নতুন করে খনন করা পুকুরে শিং মাছের পোনা মজুদ করা হয়। মজুদের ৪ মাস পর ৩ দিনের মধ্যেই সমস্ত মাছ মারা যায়। এ ক্ষেত্রে সব ধরনের চিকিৎসা করা হয়।

৩. কৈ এবং তেলাপিয়ার সাথে মিশ্রভাবে যদি শিং মাছের চাষ করা হয় এ ক্ষেত্রে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু মাছ মারা গেলেও পরবতর্ীতে ভাল ফলাফল পাওয়া যায়।

মামুন চৌধুরীর পুকুর ব্যবস্থাপনার উপর যে বক্তব্য দিয়েছেন তা প্রত্যেক মৎস্য খামারির অনুসরণ করা উচিৎ। কেননা এ ব্যবস্থাপনায় দেশি মাগুর ও পাঙ্গাস চাষ খুব ভাল হয়ে থাকে। পরিশেষে বলতে চাই সামপ্রতিক সময়ে শিং মাছের এ রোগ নিয়ে সবাই একসঙ্গে কাজ করার এখনই সময় নইলে শিং মাছের এ বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষার কোনো উপায় থাকবে না ।

এ. কে. এম. নূরুল হক

0 comments:

Post a Comment

 
Support : Dhumketo ধূমকেতু | NewsCtg.Com | KUTUBDIA @ কুতুবদিয়া | eBlog
Copyright © 2013. News 2 Blog 24 - All Rights Reserved
Template Created by Nejam Kutubi Published by Darianagar Publications
Proudly powered by Dhumketo ধূমকেতু