Home » , , » সুদানের ভাগ্যনির্ধারণী ভোট দিচ্ছেন দক্ষিণের মানুষ

সুদানের ভাগ্যনির্ধারণী ভোট দিচ্ছেন দক্ষিণের মানুষ

Written By Unknown on Sunday, January 9, 2011 | 1:16 AM

ন্তর্জাতিক মহলের সতর্ক নজরদারি ও ব্যাপক নিরাপত্তার মধ্যে আজ থেকে শুরু হচ্ছে দক্ষিণ সুদানের গণভোট। অঞ্চলটি অবিভক্ত সুদানের অংশ থাকবে, না বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে_এর নিষ্পত্তি হবে এ গণভোটের মাধ্যমে।

সুদানের ভাগ্যনির্ধারণী এ ভোটে অংশ নিতে নিবন্ধন করেছেন প্রায় ৩৮ লাখ দক্ষিণ সুদানি। বিশ্লেষকরা মোটামুটি নিশ্চিত, গণভোটের মাধ্যমে আফ্রিকার সর্ববৃহৎ দেশ সুদান দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যাবে।
পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত শান্ত থাকলেও গণভোটকে কেন্দ্র করে যেকোনো মুহূর্তে সুদানে সহিংসতা শুরুর আশঙ্কা করছেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা। ভোট চলাকালে সুদানে নিজ দেশের নাগরিকদের ভ্রমণের ওপর সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গণভোটের কর্মকাণ্ড ও সেনাদের গতিবিধি সার্বক্ষণিক তদারক করার জন্য স্যাটেলাইটেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে গতকাল শনিবার ভোটের আগের দিনও শেষ মুহূর্তের তৎপরতা চালিয়েছেন বিদেশি দূতরা। সুদানের প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশিরের অতীত কর্মকাণ্ডের কারণেই শান্তিপূর্ণ গণভোটের ব্যাপারে আশ্বস্ত হতে পারছেন না তাঁরা। হঠকারী কোনো সিদ্ধান্ত থেকে বশিরকে বিরত রাখতে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার, সিনেটর জন কেরি, বিশেষ দূত স্কট গ্রাশন, দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট থাবো এমবেকিসহ প্রভাবশালী অনেকে দক্ষিণ সুদানে জড়ো হয়েছেন। গণভোটের ফল মেনে নেওয়ার বিনিময়ে বশিরকে কিছু সুবিধা দেওয়ারও আশ্বাস দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
১৯৫৬ সালে ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পর থেকেই দেশটির মুসলিমপ্রধান উত্তর ও খ্রিস্টানপ্রধান দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে সঙ্ঘাত লেগে আছে। ১৯৮৩ সালে সরকার শরিয়া আইন জারি করলে সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ে দক্ষিণের বিদ্রোহীরা। ২২ বছরব্যাপী এ গৃহযুদ্ধে প্রায় ২০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। ২০০৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত এক শান্তিচুক্তির মাধ্যমে গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটে। এ চুক্তির প্রধান শর্ত ছিল ২০১১ সালের জানুয়ারিতে গণভোটের মাধ্যমে নিজেদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবেন দক্ষিণ সুদানিরা। এ শর্ত অনুসারেই আজ থেকে গণভোট শুরু হতে যাচ্ছে। ভোটগ্রহণ চলবে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। বিদেশে এবং উত্তর সুদানে অবস্থানকারী দক্ষিণ সুদানিরাও এতে ভোট দেবেন। শান্তিচুক্তি অনুসারে অন্তত ৬০ শতাংশ ভোট না পড়লে গণভোটের ফল গ্রহণযোগ্য হবে না। গণভোটে স্বাধীনতার পক্ষে রায় পড়লেও সব প্রক্রিয়া শেষে স্বাধীন দেশ হিসেবে দক্ষিণ সুদানের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হবে জুলাই মাসে।
এদিকে, গণভোটকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ সুদানে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। সেখানকার রাজধানী জুবায় স্বাধীনতার পক্ষে শুক্রবার বিশাল মিছিল হয়। গণভোটে অংশ নিতে উত্তর সুদানে বসবাসকারী বিপুলসংখ্যক দক্ষিণ সুদানিও জুবায় ফিরেছেন। জাতিসংঘের হিসাব মতে, গত কয়েক দিনে প্রায় এক লাখ ২০ হাজার দক্ষিণ সুদানি উত্তর সুদান থেকে ফিরেছেন। এঁদেরই একজন লোপেজ লোমং বলেন, 'এটি আমাদের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। পাঁচ দশকের প্রতীক্ষা শেষে এবার দক্ষিণ সুদান স্বাধীন হতে চলেছে।'
'পেন্ডোরার বাঙ্' খুলে যাবে!
এদিকে জাতিসংঘে নিযুক্ত সুদানের দূত দাফা আলি ওসমানও দক্ষিণ সুদানের স্বাধীনতা প্রশ্নে গণভোটের সমালোচনা করেন। শুক্রবার তিনি বলেন, 'এ গণভোট দুঃখজনক। এর মাধ্যমে আফ্রিকায় পেন্ডোরার বাঙ্ খুলে যাবে।' তিনি গণভোটের উদ্যোগ নেওয়ায় জাতিসংঘ, আফ্রিকান ইউনিয়ন ও পশ্চিমা শক্তিগুলোর মূল উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ওসমান বলেন, 'কেন এমন ক্ষতিকর একটি বিষয়কে সমঝোতার উপায় হিসেবে বাছাই করা হলো, তা আমার বোধগম্য নয়। এটা কেবল সুদান নয়, পুরো আফ্রিকায়ই বিপর্যয় ডেকে আনবে।' উল্লেখ্য, আফ্রিকার বেশির ভাগ দেশেই বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন রয়েছে। সূত্র : এএফপি, নিউইয়র্ক টাইমস।

0 comments:

Post a Comment

 
Support : Dhumketo ধূমকেতু | NewsCtg.Com | KUTUBDIA @ কুতুবদিয়া | eBlog
Copyright © 2013. News 2 Blog 24 - All Rights Reserved
Template Created by Nejam Kutubi Published by Darianagar Publications
Proudly powered by Dhumketo ধূমকেতু