সরল গরল- ‘সংবিধান রক্ষায়’ সংবিধানবিচ্যুত শপথ by মিজানুর রহমান খান

Friday, January 10, 2014

ফ্রান্সের রাজা চতুর্দশ লুই দেশ শাসন করেছিলেন ১৬৪৩ থেকে ৭২ বছরের বেশি। ‘আমিই রাষ্ট্র’ কথাটি তাঁর জবানিতেই পরিচিত। অপ্রয়োজনে সংবিধান থেকে সরে আজই শপথ এবং ১২ জানুয়ারির মধ্যে নতুন সরকার গঠনের প্রশ্নবিদ্ধ উদ্যোগ দেখে লুইয়ের কয়েকটি উদ্ধৃতি স্মরণে আসছে।
লুই বলেছিলেন, ‘যে ব্যক্তি নিজেকে জয় করতে পারে, তার সামনে আর সামান্যই কিছু টিকতে পারে।’ অবশ্য তিনি তাঁর অন্তিম শয়ানে বলেছিলেন, ‘আমি চলে যাচ্ছি কিন্তু রাষ্ট্র সর্বদাই টিকে থাকবে।’

রকিব উদ্দীন কমিশন গতকাল গেজেট করে যা করল, তাতে মনে হয় তাঁরা লুইয়ের সপ্তদশ শতাব্দীর রাজকর্মচারী। তাঁরা লুইয়ের মনোবাঞ্ছা পূরণ করছেন। লুই বলতেন, ‘এটা আইনসম্মত, কারণ এটাই আমার অভিপ্রায়।’ এখন সরকার সংসদ ভাঙছে না অথচ ইসিকে দিয়ে সংবিধান ভাঙাচ্ছে। সরকারি মন্ত্রণাদাতারা ও তাদের তথাকথিত শুভানুধ্যায়ীরা উদ্ভট ও অসাংবিধানিক মন্ত্রণা দিচ্ছেন। তাঁরা নাকি বলছেন, নবম সংসদ ভাঙতে হবে না। শপথ নিলে এবং দশম সংসদ ডাকলেই নবম সংসদ বিলুপ্ত হবে। অথচ সংবিধান বলেছে, শুধু দুভাবে সংসদ লুপ্ত হবে। প্রথমত প্রধানমন্ত্রীর লিখিত পরামর্শে রাষ্ট্রপতির আদেশে। দ্বিতীয়ত প্রথম বৈঠক থেকে পাঁচ বছরের মেয়াদ পুরা হলে। এটা পুরা হবে ২৪ জানুয়ারি। এই তারিখ এলেই তবে সংসদ আপনাআপনি ভাঙবে। কাউকে ভাঙতে হবে না। এখন নাকি সিদ্ধান্ত হয়েছে, সংসদ ভাঙতে রাষ্ট্রপতিকে পরামর্শ দেওয়া হবে না। ২৪ জানুয়ারির জন্য অপেক্ষাও করা হবে না। তালি বাজিয়ে নবম সংসদ উধাও করে দেওয়া হবে।
রাষ্ট্রপতি, স্পিকার ও প্রত্যেক নির্বাচন কমিশনার শপথ নিয়েছিলেন, আমি সংবিধানের রক্ষণ ও সমর্থন ও নিরাপত্তা বিধান করব। আইন অনুযায়ী ও বিশ্বস্ততার সঙ্গে আমার পদের কর্তব্য পালন করব এবং আমার সরকারি কার্য ও সরকারি সিদ্ধান্তকে ব্যক্তিগত স্বার্থের দ্বারা প্রভাবিত হতে দেব না।
গতকাল নতুন নির্বাচনের ফলাফল সরকারি বিজ্ঞপ্তি দ্বারা প্রকাশ করে ইসি সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদের তিন দফার শর্ত নির্দিষ্টভাবে লঙ্ঘন করল। স্পিকার শপথ পড়ানোর দায়িত্ব নিয়ে তাঁর শপথও লঙ্ঘন করলেন। এরপর বাকি থাকবেন রাষ্ট্রপতি।
১২৩ অনুচ্ছেদের বিধান নিম্নরূপ: ‘(৩) সংসদ-সদস্যদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে (ক) মেয়াদ-অবসানের কারণে সংসদ ভাঙ্গিয়া যাইবার ক্ষেত্রে ভাঙ্গিয়া যাইবার পূর্ববর্তী নব্বই দিনের মধ্যে: এবং (খ) মেয়াদ-অবসান ব্যতীত অন্য কোনো কারণে সংসদ ভাঙ্গিয়া যাইবার ক্ষেত্রে ভাঙ্গিয়া যাইবার পরবর্তী নব্বই দিনের মধ্যে: তবে শর্ত থাকে যে, এই দফার (ক) উপ-দফা অনুযায়ী অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে নির্বাচিত ব্যক্তিগণ, উক্ত উপ-দফায় উল্লিখিত মেয়াদ সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত সংসদ-সদস্যরূপে কার্যভার গ্রহণ করিবেন না।’ দশম সংসদ নির্বাচন ওই (ক) উপদফা মতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সুতরাং সংবিধান বলেছে, ‘নির্বাচিত ব্যক্তিগণ’ আগামী ২৪ জানুয়ারি অর্থাৎ ‘মেয়াদ সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত সংসদ-সদস্যরূপে কার্যভার গ্রহণ করবেন না।’ কিন্তু শপথ নিয়ে আজই তাঁরা কার্যভার গ্রহণ করছেন।
সংবিধানের ১৪৮ অনুচ্ছেদের ২(ক) দফায় শপথের বিধান আছে। তাই ১২৩ ও ১৪৮ অনুচ্ছেদ মিলিয়ে পড়তে হবে। ১৪৮(২ক) বলেছে, ‘১২৩ অনুচ্ছেদের (৩) দফার অধীন অনুষ্ঠিত সংসদ সদস্যদের সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপিত হওয়ার তারিখ হতে পরবর্তী তিন দিনের মধ্যে’ শপথ পড়াতে হবে। এই অনুচ্ছেদেরই ৩ উপদফা বলেছে, শপথ মাত্রই কার্যভার গ্রহণ।
ইসি যদি ২৩ জানুয়ারিতেও গেজেট প্রকাশ করত, তাহলে ২৫ জানুয়ারিতেই শপথ পড়ানো সম্ভব ছিল। বহুল উচ্চারিত ‘সংবিধান রক্ষার’ জন্য তারা ১৫ দিন সময় অপেক্ষা করতে পারেনি।
এর আগে ২৪ জানুয়ারির পর নতুন সরকারের শপথ গ্রহণের চিন্তাভাবনা ছিল। এখন ‘সংখ্যালঘুদের ওপর হামলাসহ বিদ্যমান পরিস্থিতির’ কথা বিবেচনা করে দ্রুততম সময়ে শপথ গ্রহণ করা হচ্ছে। পত্রিকায় এসেছে, গত সোমবার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনা করে শপথের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এটা বিশ্বাস করা কঠিন যে, রাষ্ট্রপতি সংবিধান ভঙ্গ করার সভায় পৌরোহিত্য করেছেন।
শাসকগণ প্রমাণ দিচ্ছেন, মাত্র ১৫ দিন বিলম্বের চেয়ে সংবিধান ভাঙা অনেক সহজ। অথচ এঁরাই সংবিধানের কোনো বিচ্যুতি ঘটালেও বিরাট শাস্তির বিধান করেছেন।
শাসকেরা চাইলেই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সংবিধান সংশোধন করে ১২৩ অনুচ্ছেদের ওই শর্তাংশ মুছে ফেলতে পারতেন। কিন্তু তাতে বদনাম হবে। লোকে ধরে ফেলবে। সংবিধানে সংশোধনী আনা বদনামের। কিন্তু তাকে দলিতকরণ দোষণীয় বা দণ্ডনীয় নয়। লোকে ধরতে পারবে না। আমরা তথাকথিত সাংবিধানিক শাসনে কতটা আছি, এটা তার আরেকটি প্রমাণ।
রকিব কমিশন সংবিধান ভাঙল। শপথ পড়ালে স্পিকারও তার ভাগীদার হবেন। এখন দেখতে হবে, রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রী হতে শেখ হাসিনাকে কবে কখন আমন্ত্রণ জানান। রাষ্ট্রপতি এটা করলে তাঁর তরফে একটি নির্দিষ্ট সাংবিধানিক বিচ্যুতি ঘটানো হবে। তিনি যদি সরকার করার আমন্ত্রণ জানাতে আরও ১৫ দিন সময় নেন, তাহলে সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদ বেঁচে যাবে। আমরা বুঝতে অপারগ থাকব, নবম সংসদের সত্তা মাঘের কুয়াশায় মিলিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত কী করে তিনি দশম সংসদ ডাকবেন।
২৪ জানুয়ারির আগে রাষ্ট্রপতি দশম সংসদের কোনো সদস্যকে, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বৈধভাবে নিয়োগ দিতে পারেন না। কারণ সংবিধানের ৫৬(৩) অনুচ্ছেদ বলেছে, ‘যে সংসদ সদস্য সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের আস্থাভাজন বলে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রতীয়মান হবেন, রাষ্ট্রপতি তাকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করবেন।’ কিন্তু সংবিধানমতে আমি তো ২৪ জানুয়ারির আগে কার্যভার গ্রহণ-উপযোগী কোনো ‘সংসদ সদস্য’ দেখি না। সংবিধানবহির্ভূত শপথ আইনের চোখে বৈধ শপথ হবে না। তাই রাষ্ট্রপতি তাঁদেরকে সরকার গড়তে আহ্বান জানাতে বাধ্য নন। শুনেছি, রাষ্ট্রপতি সঠিক পরামর্শ দিয়ে বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে অগ্রাহ্য করা হয়েছে।
এখন রাষ্ট্রপতি যদি ২৪ জানুয়ারির আগে দশম সংসদের কোনো সদস্যকে প্রধানমন্ত্রী হতে আমন্ত্রণ জানান, তাহলে তিনি সংবিধানের ১২৩ ও ৫৬ অনুচ্ছেদ লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত হবেন। রাষ্ট্রপতিকে অভিশংসনের ক্ষেত্র সৃষ্টি হবে।
যেকোনো ধরনের সম্ভাব্য পরিস্থিতি সংবিধান কল্পনা করেছিল। তাই ৫৭(৩) অনুচ্ছেদ বলেছে, ‘প্রধানমন্ত্রীর উত্তরাধিকারী কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীকে স্বীয় পদে বহাল থাকতে কোনো কিছুই অযোগ্য করবে না।’
আসলে ভয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ। নৈতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ দলটি এখন তাদের লব্ধ ‘বিজয়’ হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে শঙ্কিত। তাই সংবিধানের এমন শক্তিশালী রক্ষাকবচ সত্ত্বেও কখন কী হয় এ প্রশ্ন তাদের তাড়া করে ফিরছে।
বস্তুত তাঁরা রাজার ইচ্ছা পূরণ করছেন। সংবিধানবিচ্যুত হয়ে সংবিধান রক্ষণের শপথ আজ। এই রাষ্ট্রে কার কাছে এর প্রতিকার চাইব?

মিজানুর রহমান খান: সাংবাদিক।

মত-দ্বিমত- সংবিধান রক্ষার নির্বাচন by আবদুল মান্নান

Friday, January 3, 2014

৫ জানুয়ারি যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, সেই নির্বাচন নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের সমালোচনার মূল কথা হলো,
প্রধান বিরোধী দল বিএনপিকে ছাড়া এই নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। কিন্তু সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য এর কোনো বিকল্প ছিল বলে আমি মনে করি না। নব্বইয়ের গণ-আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশে যে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তাকে ব্যাহত হতে দেওয়া যায় না।

আমি এও মনে করি, সময়ের প্রয়োজনেই নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থাটি এসেছিল। সেটি কোনোভাবেই স্থায়ী ব্যবস্থা হতে পারে না। তদুপরি পঞ্চম সংশোধনীকে চ্যালেঞ্জ করে যে মামলা হয়েছিল, ২০০৪ সালে বিএনপির আমলেই হাইকোর্ট তাঁকে অবৈধ বলে রায় দেন। সরকার সেই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে এবং সুপ্রিম কোর্ট ২০১০ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর পরিপন্থী বলে ঘোষণা দেন। সেই রায়ে বলা হয়েছিল, জাতীয় সংসদ চাইলে দুই মেয়াদের জন্য এই ব্যবস্থা বহাল রাখতে পারে। জাতীয় সংসদ চায়নি। এখন তো জোর করে সেই ব্যবস্থা চলতে পারে না। যদি কেউ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা আবার সংবিধানের অন্তর্ভুক্ত করেও, আইনের চোখে সেটি টিকবে না। পৃথিবীর সব গণতান্ত্রিক দেশে যে পদ্ধতিতে নির্বাচন, বাংলাদেশেও সেই পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে। পূর্ব তিমুর বা সুদানের মতো দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে নির্বাচন হয়েছে। বাংলাদেশের মতো পুরোনো গণতান্ত্রিক দেশে সেটি কাম্য হতে পারে না।
আরেকটি কথা, ১৯৯৬ সালে যে রাজনৈতিক বাস্তবতায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল, সেই বাস্তবতা এখন আর নেই। গত পাঁচ বছরে অনেকগুলো স্থানীয় সরকার সংস্থার নির্বাচন হয়েছে, যাতে বিএনপি অংশ নিয়েছে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে জয়লাভও করেছে। বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্র তথা ভোটের অধিকার রক্ষার ব্যাপারে খুবই সজাগ। যোগাযোগব্যবস্থাও আগের চেয়ে অনেক সহজতর হয়েছে, ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা তৈরি হয়েছে, সর্বোপরি গণমাধ্যমের সজাগ দৃষ্টি রয়েছে। এ কারণে নির্বাচনে কারচুপি করা এখন আর সহজ নয়।
তবে ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হওয়াটাই বাঞ্ছনীয় ছিল। বিশেষ করে বিএনপির মতো একটি রাজনৈতিক দল, যাদের ৩০ শতাংশেরও বেশি জনসমর্থন আছে, তাদের বাইরে রেখে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, তা যেমন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে না, তেমনি উৎসবময় পরিবেশও আশা করা যায় না। সেই সঙ্গে এ কথাও স্বীকার করতে হবে, সংবিধান মানলে নির্দিষ্ট মেয়াদান্তে নির্বাচনটি হতেই হবে। ১৯৭০ সালে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) বড় একটি রাজনৈতিক দল ছিল। কিন্তু তারা নির্বাচনে অংশ নেয়নি, বরং সামরিক আইনের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমালোচনাও করেছিল। পরবর্তীকালে প্রমাণিত হয়েছে যে মওলানা ভাসানীর নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত ভুল ছিল।
খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি নির্বাচন বর্জনের পক্ষে যৌক্তিক কারণ দেখাতে পারেনি। তাঁর দলের পক্ষে জাতীয় সংসদে অন্তর্বর্তী সরকারের যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, সেটি যেমন অবাস্তব তেমনি জগাখিচুড়ি ধরনের। পরবর্তী সময়ে তারা দাবি করল, প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে শেখ হাসিনাকে চলে যেতে হবে। আমি মনে করি, এই দাবি সংবিধানবিরোধী। আগামী লোকসভা নির্বাচন সামনে রেখে সম্প্রতি ভারতেও প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের পদত্যাগের দাবি উঠলে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, মেয়াদ শেষ হওয়ার এক দিন আগেও পদত্যাগ করবেন না।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় বিএনপিকে নির্বাচনে নিয়ে আসতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যথেষ্ট সচেষ্ট ছিলেন। সংবিধানে না থাকা সত্ত্বেও তিনি সর্বদলীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব দেন। এমনকি বিরোধী দল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ কোন কোন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় নিতে চায়, সেটিও জানতে চান। কিন্তু বিরোধী দল তাতে সাড়া দেয়নি।
আমি মনে করি, এর ফলে বিএনপি দশম সংসদ নির্বাচনের ট্রেনটি মিস করেছে। এটি তাদের রাজনৈতিক ভুল বলেই মনে করি। অনেকে বলেন, জামায়াত নির্বাচনে যেতে পারছে না বলেই বিএনপি এই নির্বাচন বর্জন করেছে। এতে বিএনপির জনসমর্থন বাড়েনি। জনগণ তাদের আন্দোলনে সাড়া দিয়েছে, এ কথাও জোর দিয়ে বলা যাবে না। তদুপরি দুই মাস ধরে আন্দোলনের নামে সারা দেশে যে সহিংস তাণ্ডব চলেছে, মানুষ হত্যা ও সরকারি সম্পদ ধ্বংস করার ঘটনা ঘটেছে, তা জামায়াতেরই কাজ। কিন্তু এর দায় বিএনপিও কোনোভাবে এড়াতে পারে না। কেননা, তাদের আহূত কর্মসূচির সুযোগেই জামায়াতে ইসলামী এসব অপকর্ম করতে পেরেছে।
দ্বিতীয়ত, আমার ধারণা, এ মুহূর্তে সাংগঠনিকভাবে সংগঠিত নয় বলে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয়নি। যেকোনো গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় একাধিক গণতান্ত্রিক দল থাকা প্রয়োজন। সে কারণে একটি শক্তিশালী দল হিসেবে বিএনপি গণতন্ত্র চর্চায় কার্যকর ভূমিকা রাখবে, সেটাই সবার প্রত্যাশা। কেননা, একক গণতান্ত্রিক দল থাকলে সেটি গণতন্ত্রের জন্য মঙ্গলজনক নয়। আরেকটি কথা, বিএনপি জনগণকে আন্দোলনে শরিক হতে বললেও দলের নেতাদেরও আন্দোলনে নামাতে পারেনি। এটি তাদের সাংগঠনিক দুর্বলতা। তবে দশম নির্বাচনের ট্রেন মিস করলেও বিএনপিকে আগামী দিনে নির্বাচনী রাজনীতির জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।
ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী ও অন্য মন্ত্রীরা বলেছেন, সমঝোতার ভিত্তিতে একাদশ সংসদ নির্বাচন হতে পারে। তবে সেই সমঝোতা হতে হবে অবশ্যই সংবিধানের আলোকে এবং মৌলবাদী জামায়াতে ইসলামী রাজনীতিকে না বলার মধ্য দিয়ে। বিএনপির জামায়াতকে ছাড়তে হবে। গণতন্ত্র ও জামায়াতের রাজনীতি একসঙ্গে চলতে পারে না।
অনেকেই ১৫৪টি আসনে বিনা নির্বাচনে প্রার্থীদের জয়ী হওয়ার কথা বলেছেন। ওই সব আসনে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেই জনপ্রতিনিধি বাছাই করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ ইচ্ছা করলে ওই সব আসনে ডামি ক্যান্ডিডেট দিয়ে ভোটের মহড়া দেখাতে পারত। কিন্তু তারা সেটি দেখায়নি রাজনৈতিক সততার কারণেই। তারা শেষ পর্যন্ত ভেবেছিল, বিএনপি নির্বাচনে আসবে এবং একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন হবে।

আবদুল মান্নান: সাবেক উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

গণতন্ত্র ও জবাবদিহি- সুপ্রিম কোর্ট যখন সংবিধানবিচ্যুত by মিজানুর রহমান খান

Tuesday, December 31, 2013

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করছেন। অবিরাম জলকামান দাগিয়ে ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রা’ ভন্ডুলের পটভূমিতে তিনি গতকাল বলেছেন,
‘এক-এগারোর কুশীলবেরা আবার সক্রিয়। একশ্রেণীর বুদ্ধিজীবী অসাংবিধানিক সরকারকে ক্ষমতায় আনতে চান।’ এটা সত্যি, নাকি গোয়েবলসীয় প্রচারণা?

একজন রহস্যময় আবু সাফার লড়াইটা ছিল এইট পাসের তথ্য প্রকাশ না করা। হঠাৎ তাঁর অশরীরী আবির্ভাব ঘটে আপিল বিভাগে। প্রধান বিচারপতি পদে তখন জে আর মোদাচ্ছির হোসেন, যিনি ইয়াজউদ্দিনের অনুকূলে সেই নজিরবিহীন আদেশটি দিয়ে এক-এগারোর পথ প্রশস্ত করেছিলেন।
রাস্তায় রাজনীতিকদের খুনোখুনিটা চোখে পড়ে। কিন্তু সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান কী করে রক্তাক্ত হয়, সেখানেও যে ‘ট্রাম্পকার্ড’ চলে, সেটা চোখে পড়ে না।
একটি রাষ্ট্রে অনেকগুলো নখদন্তযুক্ত সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান অবশ্যই থাকতে হবে। যারা না থাকলে এ ধরনের প্রতিকারহীন স্বেচ্ছাচার ও ধস্তাধস্তি চলতেই থাকবে। অথচ গণতান্ত্রিক পন্থায় কারও প্রতিকার লাভের সুযোগ থাকবে না। যেমন এখন আমাদের অসহায় লাগছে। ক্ষমতাসীনদের সৃষ্ট পুলিশি রাষ্ট্র ও ত্রাসের শাসন প্রতিহত করতে কার্যকর ভূমিকা রাখার কথা সুপ্রিম কোর্টেরই। কিন্তু তাঁরা তা পারবেন না। তাঁরা পারুন তা দুই নেত্রীও চান না। এই অবস্থা ‘একশ্রেণীর বুদ্ধিজীবী’ সৃষ্টি করেনি। ক্রান্তিকালে সুপ্রিম কোর্ট অতীতেও ভরসা ছিল না। এখনো নয়।
দলীয়করণের নখরে প্রতিটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানই যে রক্তাক্ত তার প্রমাণ গতকালের ঢাকা নতুন করে দেখল। সুপ্রিম কোর্ট যদি নিজেকেই বাঁচাতে পারতেন, তাহলে তার চত্বরে কোনো দলেরই মিছিল-মিটিং হওয়ার কথা নয়। এক-এগারোর ভাঙচুর, ধর্মঘট ও রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার কেউ চূড়ান্ত আইনি পরিণতি দেখতে চায়নি।
আবু সাফার রায়দানকারী বিচারপতি এম এ মতিন যখন সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে মিছিল-সমাবেশ নিষিদ্ধ করলেন, তখন বিএনপি ক্ষমতায়। তাঁর বিরুদ্ধে আওয়ামীদের সে কি লম্ফঝম্ফ। রায়ের কপি পুড়ল। কালো ফিতা বেঁধে ‘বাকস্বাধীনতা হরণে’ প্রতিবাদ হলো। সেই রায় কাগুজে। দুই দল ওই রায় প্রতিদিন দলিত করে চলেছে।
আবু সাফায় আসি। এক-এগারো এসেছিল বলেই হাওয়া ঘুরল। না হলে সম্পদের বিবরণীর দেখা পেতাম না। ১১/১২/০৭। সুপ্রিম কোর্ট চূড়ান্তভাবে আবু সাফার আপিল ফেলে দিয়ে বিচারপতি মতিনের হাইকোর্টের রায় বরণ করলেন। এক-এগারোর অন্যতম কুশীলব
সাবেক প্রধান বিচারপতি জে আর মোদাচ্ছিরদের পেশাগত অসদাচরণের বিচার আওয়ামী লীগাররা করেনি। বুলন্দ আওয়াজও তোলেনি। কুশীলব বিচারকদের জবাবদিহি কেউ নেয় না। নাগরিকদের বিরুদ্ধে এটা একটা অদৃশ্য চক্রান্ত। জবাবদিহি নিলে বেআইনি সরকারি অবরোধ ভেস্তে
দিতেন আদালত।
গণতন্ত্রের সাচ্চা অভিযাত্রা চাইলে তাই সুপ্রিম কোর্টকে নিয়ে আঁতাত ভাঙতে হবে।
বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক, বিচারপতি শাহ আবু নঈম মোমিনুর রহমান, বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রশীদ, বিচারপতি শরিফ উদ্দিন চাকলাদার, বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন প্রমুখ বিগত জরুরি অবস্থায় বিশেষভাবে আলোচিত হন। আইনজীবী রফিক-উল হক আবির্ভূত হয়েছিলেন জাতির দুর্ভাগ্যজনক ত্রাতা হিসেবে।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আইনের ২৬ ধারায় কেউ সম্পদের বিবরণীর নোটিশ পেয়ে তথ্য গোপন করলে তিন বছর জেল। ২৭ ধারায় জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের জন্য ১০ বছরের জেল। ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর ওই দুই কারণেই দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পরে তাঁরই আপিলের প্রথম শুনানি হলো। তাঁর মতো দণ্ডিতকে মন্ত্রিত্ব দেওয়া বিরাজনৈতিকীকরণ, নাকি তাঁর হলফনামা নিয়ে পত্রিকায় নতুন প্রতিবেদন প্রকাশের সুযোগ সৃষ্টি হওয়া ‘বিরাজনৈতিকীকরণ’? ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়’ বিরোধী দলের সভা ভাঙা ও গণগ্রেপ্তার চলবে, কিন্তু এর কি উত্তর পেতে হবে না?
দুর্নীতির মামলার বিচারে সুপ্রিম কোর্ট ক্রমাগতভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করছেন। কারণ, জনগুরুত্বসম্পন্ন মামলার কোনো আইনি ব্যাখ্যা তাঁর অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেওয়ার কথা।
৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৭ থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৭ দুদকে কমিশন ছিল না। দুদকের সচিব সম্পদের বিবরণী চেয়ে নোটিশ দেন। এরপর ৫৪টি মামলা হয়। দুই দলীয় রুই-কাতলা মোটামুটি আধাআধি। এঁদের অনেকেই গতকালের ঢাকাই রঙ্গমঞ্চের পক্ষ-বিপক্ষের কুশীলব হিসেবে হাজির হয়েছেন।
রফিক-উল হক তবলায় চাটি মারলেন। কমিশন ছিল কি ছিল না সেটা ছিল ঠুনকো অজুহাত। অথচ সেটাই হলো ‘আইনের শাসন’। সুপ্রিম কোর্টের বাতাস ভারী হলো। সচিবের নোটিশ দেওয়ার এখতিয়ার ছিল না। সুতরাং ওই নোটিশ থেকে উদ্ভূত মামলাগুলো অবৈধ। তারেকের বন্ধু গিয়াসউদ্দিন আল মামুন, শেখ সেলিমের বিয়াই বিএনপির মন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মির্জা আব্বাস বিএনপির রাজনীতির শাহজাদারা অভিযুক্ত ছিলেন। অধ্যাদেশ দিয়ে ওই ত্রুটি ঘোচানো হলো। অথচ নির্বাচিতের লেবাস পরেই আওয়ামী লীগের প্রথম কাজ হলো ওই অধ্যাদেশটিকে হত্যা করা। বিএনপিও আনন্দে নাচল।
বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন আওয়ামী লীগ আমলে মহীউদ্দীন খান আলমগীরের মামলায় প্রথম রায়টি দিলেন। এটাই ছিল জরুরি অবস্থায় বিশেষ আদালতে দেওয়া সাজার বিরুদ্ধে হাইকোর্ট বিভাগের প্রথম ফৌজদারি আপিলের রায়। সচিবের নোটিশকে অবৈধ বললেন। এটি যখন আপিল বিভাগে গেল, সেখানে অথর জাজ হলেন বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক। তিনি বললেন, ‘জেলে রেখে নোটিশ দেওয়া যাবে না। সচিব কেবলই কর্মচারী।’ মহীউদ্দীন খান অমনি খালাস। ওই রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ অবশ্য এখনো বিচারাধীন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়ে তিনি তাঁর মামলার তদবিরে দুদকে ফোন করেছিলেন। তাঁকে বলা হয়েছে, স্যার, আপনি একা তো নন, অনেক মামলার ভাগ্য জড়িত।
এক-এগারোতে নোটিশ পাওয়া ৫৪ জনই মহীউদ্দীন খান মামলার রায় দেখিয়ে উদ্বাহু নৃত্য করলেন। দুদক বলল, জেলে থাকলে নোটিশ নয়, এটা অবিটার ডিকটা মানে পর্যবেক্ষণ, বাধ্যকর নয়। মওদুদের মামলায় বিচারপতি খন্দকার মূসা খালেদ এটা মানলেন। এর বিরুদ্ধে মওদুদ ছোটেন আপিল বিভাগে। লিভ মঞ্জুর হয়েছে। দেশ যুদ্ধাবস্থায় পৌঁছে গেছে। তবু জেলে রেখে নোটিশ তর্কের সুরাহা হলো না।
এক-এগারোতে শেখ হাসিনার মামলায় বিচারপতি শাহ আবু নঈম সম্পদ বিবরণী দাখিল করাকেই অবৈধ বলেছিলেন। সেটা ছিল দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের প্রতি প্রথম বড় চপেটাঘাত। তারিখটি ছিল ২১ নভেম্বর ২০০৭। দুই দলের একশ্রেণীর রাজনীতিক বলেছিলেন, এই তো চাই। ওই একটি আদেশের ফলে সন্দেহভাজন দুর্নীতিগ্রস্তরা উল্লাসে ফেটে পড়েছিল। দুদক হতভম্ব হয়ে পড়েছিল।
২০০৮ সালের ১৩ মার্চ। আপিল বিভাগ ক্ষীণ কণ্ঠে অবশেষে মানলেন, নোটিশ ভালো জিনিস। এটা নিরীহ। সম্পদের বিবরণ জানতে কাউকে নোটিশ দেওয়া মানেই তাঁর বিরুদ্ধে কার্যধারা চালু নয়। বিচারপতি শাহ আবু নঈমকে নাকচ করলেন আপিল বিভাগ। তত দিনে দুর্নীতিবিরোধী অভিযান লাটে উঠেছে। প্রায় ৫০টি ডাকসাইটে মামলা, যা গত কয়েক দিনে প্রকাশিত কিচ্ছাকাহিনির চেয়ে দুর্দান্ত, সেগুলো ওই রায়ের কারণে মুখ থুবড়ে পড়েছিল।
দুদক বনাম ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর মামলায় আপিল বিভাগ কিন্তু বললেন, কমিশন চাইলে মহীউদ্দীন খানকে নতুন করে নোটিশ দিতে পারে। কিন্তু এক-এগারোর পরে দুদক ক্ষমতাসীন দলের তারকাদের কাউকেই নোটিশ দেয়নি।
বীর বাহাদুরের বাহাদুরিণীর সম্পদ বেড়েছে এক হাজার গুণের বেশি। অথচ তাঁর আয়ের উৎস অজ্ঞাত। এক-এগারোতে কতিপয় ডাকসাইটের স্ত্রীরা নোটিশ ও মামলা খেয়ে ঢোল হলেন। বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রশীদ রায় দিলেন স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের অভিযুক্ত করতে হলে নোটিশ লাগবে। এর ফলে এক-এগারোয় শতাধিক মামলা মারা পড়ল। এ রায়ের বিরুদ্ধে লিভ মঞ্জুর হলো না। সরাসরি নাকচ হলো। তাঁর রায়টি টিকল।
বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন বললেন, আদালতে দুদকীয় মামলা ঠুকতে চার কিসিমের অনুমোদন লাগবে। আপিল বিভাগ বললেন, একটিতেই চলবে। চারটিকে একটিকে পরিণত করার মধ্যে শত মামলা ফসকে গেছে। এর দায় কে নেবে?
জরুরি অবস্থায় বিধি হলো যা এখনো বহাল, এজাহার দায়েরের পরে তদন্ত সেরে দুদক কর্মকর্তাকে ৬০ দিনের মধ্যে অভিযোগপত্র দিতে হবে। হাবিবুর রহমান মোল্লার মামলায় দুদক যুক্তি দিল, এটা বাধ্যকর নয়, নির্দেশনামূলক। হাইকোর্টে বিচারপতি মোহাম্মদ আনোয়ারুল হক এটা মানলেন। আপিল বিভাগও সেটা বহাল রাখলেন। তবু এ দুই রায়ের ফাঁকে এ প্রশ্নে শত মামলায় রুল ও স্টে পড়ল। বিচারিক আদালতের বিচার লাটে উঠল।
মো. খুরশীদ আলম খান দুদকের প্যানেল আইনজীবী। গত পাঁচ বছরে সুপ্রিম কোর্ট কী দিলেন জানতে চাইলে তিনি যা বললেন তার অর্থ দাঁড়াল, অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ নিয়েই তিনি একটি ব্যর্থ লড়াই করেছেন। উচ্চ আদালতে দুদকের চার শতাধিক মামলা আছে। তিনি একাই এক শ থেকে দেড় শ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ সামলাতে দুই বিভাগে ছোটাছুটি করেছেন।
বলি, জনগণের লাভ কী? ফল কী? জানলাম একটি মামলাতেও কারও দণ্ড আপিল বিভাগ পর্যন্ত গিয়ে চূড়ান্ত হয়নি। এক-এগারোর দুই বছরেও নয়। নির্বাচিতের অহংকারের পাঁচ বছরেও নয়। কুশীলবেরা সাবধান!

মিজানুর রহমান খান: সাংবাদিক।
mrkhanbd@gmail.com
 
Support : Dhumketo ধূমকেতু | NewsCtg.Com | KUTUBDIA @ কুতুবদিয়া | eBlog
Copyright © 2013. News 2 Blog 24 - All Rights Reserved
Template Created by Nejam Kutubi Published by Darianagar Publications
Proudly powered by Dhumketo ধূমকেতু